বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে চলতি বছরে একুশে পদক পাচ্ছেন জনপ্রিয় বাংলা টাইপিং সফটওয়্যার অভ্র কিবোর্ডের আবিষ্কারক মেহেদী হাসান খান। তবে এই সম্মাননা তিনি শুধু নিজের নয়, বরং অভ্রর নির্মাণে যারা সম্পৃক্ত ছিলেন, তাদের সবার প্রতি উৎসর্গ করেছেন।

রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় অভ্রর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক পোস্টে মেহেদী হাসান খান নিজেই এ তথ্য জানান।

অভ্রর সূচনার গল্প

তিনি জানান, ২০০৩ সালে যখন অভ্র তৈরির কাজ শুরু হয়, তখন কেউই এই সফটওয়্যার বা তাকে চিনতেন না। বাংলা ইউনিকোডের ব্যবহার তখনো নতুন ছিল, ফলে নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো। একটি অনলাইন ফোরাম তৈরি করে তিনি ব্যবহারকারীদের সমস্যার সমাধান করতে থাকেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও প্রযুক্তিপ্রেমী তরুণরা এতে যুক্ত হন এবং অভ্র উন্নয়নের যাত্রা আরও গতিশীল হয়।

দলগত প্রচেষ্টার স্বীকৃতি

মেহেদী হাসান খান বলেন, ‘অভ্রর পুরো যাত্রাপথে অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। কেউ কেউ বিভিন্ন কারণে দূরে সরে গেছেন, তবে কিছু নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি এক দশকের বেশি সময় ধরে অভ্রর উন্নয়নে কাজ করেছেন। তাদের সহযোগিতা ছাড়া এই সফটওয়্যার এতদূর আসতে পারতো না।’

তিনি আরও জানান, একুশে পদক গ্রহণের ক্ষেত্রে তিনি একক কৃতিত্ব নিতে চান না। দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করা সহযোদ্ধা রিফাত, সিয়াম, শাবাবসহ অভ্রর টিমের অবদানকেও তিনি স্বীকৃতি দিতে চান।

একুশে পদকের স্বীকৃতি

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় চলতি বছর (২০২৫) একুশে পদকের জন্য ১৪ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলকে মনোনীত করেছে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পদকপ্রাপ্তদের তালিকা ঘোষণা করেন।

দলীয় অর্জনের সংস্কৃতি চালু রাখার আহ্বান

মেহেদী হাসান খান বলেন, ‘দলের কাজের কৃতিত্ব একজন ব্যক্তির নয়, বরং সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল। একুশে পদক কেবল ব্যক্তিগত সম্মাননা নয়, বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ যেখানে আমরা সবাই একসঙ্গে হতে পারি।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকেও এ বছর একুশে পদক দেওয়া হচ্ছে, যা দলগত স্বীকৃতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

বাংলা ভাষা ও প্রযুক্তিতে অভ্রর অবদান অগ্রগণ্য। এই সফটওয়্যার বাংলা টাইপিংকে সহজলভ্য ও সবার জন্য উন্মুক্ত করেছে, যা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।