
রমজান মাস মুসলমানদের জন্য বছরের সবচেয়ে পবিত্র সময়। এই মাসে বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা আল্লাহর নির্দেশ পালনের উদ্দেশ্যে রোযা পালন করে। কুরআন ও হাদীসে রোযার গুরুত্ব ও ফযীলত বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে, যা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
কুরআনের আলোকে রোযার বিধান
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা স্পষ্টভাবে রোযার বিধান দিয়েছেন। তিনি বলেন:
“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে, যেমন ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।” (সূরা আল-বাকারা: ১৮৩)
ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আয়াত প্রমাণ করে যে, রোযা শুধুমাত্র ইসলামে নয়, বরং পূর্ববর্তী নবীগণের উম্মতদের জন্যও ফরয ছিল। মূলত, রোযা একজন মুসলমানকে আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে আল্লাহর কাছাকাছি নিয়ে যায়।
হাদীসে রোযার ফযীলত
হাদীসে রসুল (সাঃ) রোযার অসংখ্য ফযীলতের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন:
- “রোযা ঢালের মতো, যা তোমাকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করবে।” (সহীহ বুখারি: ১৮৯৪, সহীহ মুসলিম: ১১৫১)
- “জান্নাতে একটি দরজা আছে, যার নাম ‘আর-রাইয়ান’। কিয়ামতের দিন এই দরজা দিয়ে কেবল রোযাদারগণ প্রবেশ করবে।” (সহীহ বুখারি: ১৮৯৬, সহীহ মুসলিম: ১১৫২)
- “কিয়ামতের দিন রোযা ও কুরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে।” (মুসনাদ আহমদ: ৬৬২৬, সহীহ হাদীস)
- “রোযাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মিশকের সুগন্ধির চেয়েও উত্তম।” (সহীহ বুখারি: ১৮৯৪, সহীহ মুসলিম: ১১৫১)
রমজানের গুরুত্ব ও মুসলিম উম্মাহ
বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোতে রমজান মাস শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদগুলোতে ভিড় বেড়ে যায়। তারাবিহ নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত ও দান-সদকার মাধ্যমে মানুষ নিজেদের আত্মশুদ্ধির জন্য চেষ্টা করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোযা শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকেও উন্নত করে। রোযা রাখার ফলে দেহের বিষাক্ত পদার্থ দূর হয় এবং সংযম ও ধৈর্যের মাধ্যমে মানুষের নৈতিক উন্নতি ঘটে।
উপসংহার
রমজান ও রোযা মুসলমানদের জন্য এক বিশেষ রহমত ও বরকতের মাস। এই মাসে আত্মশুদ্ধি, সংযম, ধৈর্য ও ইবাদতের মাধ্যমে একজন মুমিন আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারেন। ইসলামী বিশেষজ্ঞরা সকল মুসলমানকে রোযার গুরুত্ব বোঝার এবং যথাযথভাবে এটি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।
আপনি কি রমজানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন?