
নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার আদালতে অভিযোগ করে বলেছেন, ‘আমার বড় ভাই পাঁচ বছর সংসদ সদস্য ছিলেন, তাঁকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে। আমি সেসময় শেখ হাসিনার পাশে না থাকলে আমারও একই পরিণতি হতো। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গণভবনে বাধ্য হয়ে বক্তব্য দিয়েছিলাম।’
আজ (বুধবার) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে ধানমন্ডি ও যাত্রাবাড়ী থানার দুই মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড শুনানির সময় তিনি এ কথা বলেন। আদালত পরে প্রতিটি মামলায় পাঁচ দিন করে মোট ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
নজরুল ইসলামের আইনজীবীর বক্তব্য
নজরুল ইসলামের পক্ষে তাঁর আইনজীবী রিমান্ড বাতিলের আবেদন করে বলেন, ‘তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পোদ্যোক্তা। তাঁর অধীনে পাঁচ লাখ মানুষ কাজ করেন। তিনি কারাগারে থাকলে প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং বহু মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বে। কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও তাঁকে হয়রানি করা হচ্ছে।’
তাঁর শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে রিমান্ড বাতিল করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়ার আবেদন করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের প্রতিক্রিয়া
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি ওমর ফারুক ফারুকী দাবি করেন, ‘নজরুল ইসলাম ফ্যাসিস্ট সরকারকে সহায়তা করেছেন এবং ছাত্র আন্দোলন দমনে অর্থায়ন করেছেন।’
এ সময় নজরুল ইসলাম আদালতের অনুমতি নিয়ে বলেন, ‘আমি হার্টের রোগী, প্রচণ্ড কষ্ট পাচ্ছি। আমার রিমান্ড বাতিল করে আমাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিন।’
সাবেক প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানের চিঠির রহস্য
এদিকে সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানকে সাভার থানার সাতটি মামলায় আদালতে হাজির করা হয়। এর মধ্যে একটি মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কে এম মহিউদ্দিন।
আদালতে হাজির করার সময় দেখা যায়, হাজতখানা থেকে এজলাসে নেওয়ার পথে তিনি পকেট থেকে একটি টিস্যু বের করেন এবং তা একজন ব্যক্তির হাতে দেন। পরে সেই ব্যক্তি দ্রুত সরে পড়েন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ওই ব্যক্তি এনামের ভাই পরিচয় দিয়েছেন। তবে চিঠিতে কী লেখা ছিল, তা জানা যায়নি।
এনামুর রহমানের বক্তব্য
শুনানিতে ডা. এনাম বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনের সময় আমি বিনামূল্যে চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছি। জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে গুলিবিদ্ধ ২৯০ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়েছি। এছাড়া রানা প্লাজার ধসের সময় সাড়ে পাঁচ হাজার শ্রমিককে চিকিৎসা দিয়েছি। এনাম মেডিকেল মানবিক সেবায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
শুনানি শেষে আদালত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কাইয়ুম হত্যা মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন এবং সাভার থানার আরও ছয়টি মামলায় এনামুর রহমানকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেন।