
কুয়াকাটা, পটুয়াখালী: বাংলাদেশের অন্যতম নৈসর্গিক সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটায় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন পর্যটকরা। ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ সমুদ্রসৈকত পর্যটকদের কাছে ‘সাগরকন্যা’ নামে পরিচিত। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পটুয়াখালী জেলার একটি শহর, যা পটুয়াখালী সদর থেকে ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত।
দর্শনীয় স্থানসমূহ:
কুয়াকাটা কেবল সমুদ্রসৈকতের জন্যই নয়, আরও বেশ কিছু দর্শনীয় স্থানের জন্য বিখ্যাত। পর্যটকরা কুয়াকাটায় গেলে নিম্নলিখিত স্থানগুলো ঘুরে দেখতে পারেন:
১. কুয়াকাটার কুয়া: কুয়াকাটা নামকরণের পেছনের ঐতিহাসিক কুয়াটি এখনও কেরাণিপাড়ায় সংরক্ষিত রয়েছে। এটি রাখাইনদের ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে পরিচিত।
- গঙ্গামতির জঙ্গল: সৈকতের পূর্ব দিকে গঙ্গামতির খালের কাছে অবস্থিত এ জঙ্গলে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা, পাখি, বন মোরগ-মুরগি, বানরসহ নানা বন্যপ্রাণী দেখা যায়।
- সীমা বৌদ্ধ মন্দির: কেরানিপাড়ায় অবস্থিত এই মন্দিরে প্রায় ৩৭ মন ওজনের অষ্টধাতুর তৈরি প্রাচীন বৌদ্ধ মূর্তি রয়েছে।
- ক্রাব আইল্যান্ড: কুয়াকাটা সৈকতের পূর্বদিকে অবস্থিত এই দ্বীপে হাজারো লাল কাঁকড়ার দল পর্যটকদের মুগ্ধ করে।
- শুঁটকি পল্লী: কুয়াকাটার জেলে পল্লীতে নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত শুঁটকি তৈরির মৌসুম চলে। পর্যটকরা এখান থেকে স্বল্প মূল্যে শুঁটকি কিনতে পারেন।
- মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ মন্দির: কুয়াকাটা সৈকত থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই মন্দিরে উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ বৌদ্ধ মূর্তি রয়েছে।
- ফাতরার বন: কুয়াকাটার পশ্চিমে অবস্থিত এই বন সুন্দরবনের বৈশিষ্ট্য বহন করে। এখানে বন মোরগ, বানর, বুনো শুকরসহ নানা বন্যপ্রাণী দেখা যায়।
- কেরানিপাড়া: রাখাইনদের বসবাসের অন্যতম স্থান কেরানিপাড়ায় তাদের সংস্কৃতি ও জীবনধারা পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
কুয়াকাটা ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য:
পরিবহন: ইউনিক, হানিফ, শ্যামলী, গ্রিন সেন্টমার্টিন, প্রচেষ্টা, ইলিশসহ বিভিন্ন বাস সার্ভিসের মাধ্যমে দেশের যেকোনো স্থান থেকে কুয়াকাটায় যাওয়া যায়।
আবাসন: পর্যটকদের জন্য কুয়াকাটায় বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে, যেখানে ৪০০ থেকে ৫০০০ টাকার মধ্যে থাকা যায়।
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ও সমুদ্রসৈকতের স্বাদ নিতে কুয়াকাটা ভ্রমণ হতে পারে এক অনন্য অভিজ্ঞতা।