
আমাদের অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে গুলঞ্চ। আয়ুর্বেদশাস্ত্রে এটিকে ‘অমৃত’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি একটি লতানো উদ্ভিদ, যা অন্য গাছের ওপর বেয়ে ওঠে। গুলঞ্চের কাণ্ড, পাতা ও অন্যান্য অংশ নানা ধরনের রোগ নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়।
গুলঞ্চ কেন উপকারী?
বিভিন্ন গবেষণায় গুলঞ্চে থাকা টারপিনয়েড, অ্যালকালয়েড, লিগন্যান ও স্টেরয়েড উপাদানের সন্ধান পাওয়া গেছে। এসব উপাদান অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিডায়াবেটিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত।
গুলঞ্চের ৮টি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা
১. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
গুলঞ্চে থাকা বারবেরিন যৌগ রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং এটি ডায়াবেটিসের ওষুধ মেটফরমিনের মতো কাজ করে।
- হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়
এটি রক্তের লো-ডেনসিটি (কম ঘনত্বের) লাইপোপ্রোটিন কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদ্রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। - শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট
গুলঞ্চ কোষকে অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে রক্ষা করে, যা শরীরের সার্বিক সুস্থতায় ভূমিকা রাখে। - অ্যালার্জির বিরুদ্ধে কার্যকর
এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা শক্তিশালী করে, ফলে অ্যালার্জি থেকে সুরক্ষা দেয়। - জ্বর উপশমে সহায়ক
দীর্ঘমেয়াদি জ্বর নিরাময়ে গুলঞ্চের ব্যবহার বহুদিন ধরে প্রচলিত। - মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়
গুলঞ্চ দুশ্চিন্তা ও অবসাদ কমাতে সাহায্য করে, ফলে মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। - কাশি ও হাঁপানি নিরাময়ে সহায়ক
দীর্ঘস্থায়ী কাশি ও হাঁপানির চিকিৎসায় গুলঞ্চ কার্যকর ভেষজ হিসেবে পরিচিত। - চর্মরোগ নিরাময়ে ভূমিকা রাখে
বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যায় গুলঞ্চের নির্যাস বা রস ব্যবহার করা হয়।
যেভাবে গুলঞ্চ গ্রহণ করবেন
গুলঞ্চের কাণ্ড ও পাতার রস গ্রহণ করা যায়, এছাড়া বাজারে গুলঞ্চ গুঁড়ো হিসেবেও পাওয়া যায়। তবে অতিরিক্ত গুলঞ্চ গ্রহণ কিছু শারীরিক সমস্যার কারণ হতে পারে। বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা ও স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি গ্রহণ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
সূত্র: হেলথ লাইন