
সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে শিক্ষার্থীদের টানা দ্বিতীয় দিনের আন্দোলনে রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে চরম যানজট সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) জুমার নামাজের পর শিক্ষার্থীরা ফের কলেজের সামনের সড়ক অবরোধ করেন, যা বিকেল পর্যন্ত চলমান ছিল।
শিক্ষার্থীদের অনশন ও অবরোধ অব্যাহত
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে লিখিত আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্স শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীর সানি বলেন, “শুক্রবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো প্রতিনিধি আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি। আমরা লিখিত ঘোষণা ছাড়া আন্দোলন প্রত্যাহার করবো না।”
বিক্ষোভকারীরা জানান, বর্তমানে ১২ জন শিক্ষার্থী অনশন করছেন, এবং তাদের শারীরিক অবস্থা ক্রমেই অবনতি হচ্ছে।
সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে
অবরোধের ফলে মহাখালী থেকে গুলশান-১ পর্যন্ত বীর উত্তম এ কে খন্দকার সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। শুধুমাত্র অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি রোগীবাহী যান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এতে কর্মজীবী মানুষ, শিক্ষার্থী, রোগী ও সাধারণ যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
বিকেল তিনটার দিকে দেখা যায়, একটি সিএনজি চালকের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের তর্ক হয়। চালক আবদুল জলিল অসুস্থ রোগী নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করলেও প্রথমে অবরোধকারীরা তাকে ছাড়তে চায়নি। পরে গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে গাড়িটি যেতে দেওয়া হয়।
একইভাবে, শাহজাদপুরগামী যাত্রী সোনিয়া আক্তার বলেন, “আমার যাওয়ার একটাই রাস্তা, অনেক অনুরোধ করেও রিকশা যেতে দিল না তারা। বাধ্য হয়ে ফিরে যেতে হলো।”
কর্তৃপক্ষের সাড়া নেই, উত্তপ্ত পরিস্থিতি
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দ্বিতীয় দিনে গড়ালেও এখন পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ হলেও, অবরোধ দীর্ঘায়িত হলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলন রাত চারটা পর্যন্ত চলে। এরপর অনশনরত শিক্ষার্থীদের কয়েকজন কলেজ ফটকের সামনে অবস্থান নেন। শুক্রবার আবারও বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে তারা দাবি আদায়ে অনড় থাকার ঘোষণা দিয়েছেন।
এখন দেখার বিষয়, সরকারের পক্ষ থেকে কবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসে এবং শিক্ষার্থীদের দাবি কতটা পূরণ হয়।