
ঢাকা, ১৪ ফেব্রুয়ারি: আজ পহেলা ফাগুন, ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। শীতের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতিতে লেগেছে রঙের ছোঁয়া। শুকনো পাতার ঝরাপথ পেরিয়ে নতুন কচি পাতার উন্মেষে সেজেছে চারপাশ। নদীর কিনারে, সবুজ ঘাসে, কুঞ্জবনে আর পাহাড়ি অরণ্যে বসন্তের নবযৌবন প্রাণ ছুঁয়ে দিয়েছে।
বসন্ত মানেই নতুনের আহ্বান। বাঙালির সংস্কৃতি, কাব্য, সংগীত, নৃত্য এবং চিত্রকলায় বসন্তের ছাপ স্পষ্ট। এদিন বাঙালি জাতি পালন করে ‘পহেলা ফাল্গুন-বসন্ত উৎসব’। সময়ের পরিক্রমায় এটি সর্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে। বসন্ত উৎসবের রয়েছে ঐতিহ্যময় ইতিহাস।
১৫৮৫ সালে মোগল সম্রাট আকবর বাংলা নববর্ষ গণনার সূচনা করেন এবং ১৪টি উৎসবের প্রচলন করেন। তার মধ্যে অন্যতম ছিল বসন্ত উৎসব। যদিও সে সময় বসন্তের উৎসবের রূপ আজকের মতো ছিল না, তবুও বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে এটি গভীরভাবে মিশে আছে।
বৃদ্ধ-তরুণ-তরুণীরা আজ বসন্তের আনন্দে মেতে উঠবে। শীতের বিদায় আর বসন্তের আগমনে নগরজুড়ে থাকবে নানা আয়োজন। বাসন্তী রঙের পোশাক পরে মানুষ স্বাগত জানাবে নতুন ঋতুকে। ফুলের সৌরভে মুখর হয়ে উঠবে চারপাশ। ভালোবাসার রঙে রাঙবে মন।
তবে বসন্ত শুধু আনন্দ নয়, বেদনার স্মৃতিও বয়ে আনে। ফাগুন মানেই ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি, বায়ান্নর আত্মত্যাগের কথা মনে করিয়ে দেয়। শিমুল ও কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙ শহীদদের রক্তের প্রতীক হয়ে ওঠে।
ফাগুনের এই সময়ে পলাশ, শিমুলের আগুন রঙ প্রকৃতিকে করে তোলে বর্ণিল। বসন্তের দূত কোকিলের কুহুতান হৃদয়ে জাগিয়ে তোলে এক নতুন স্পন্দন, স্মৃতির গহিনে ছড়িয়ে দেয় অনুভূতির ঢেউ।