
ফের বেড়েছে রেমিট্যান্স ডলারের দাম। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ডলারের দাম অন্তত ৫০ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ১২২ টাকা ৫০ পয়সায়। শুধু তাই নয়, মঙ্গলবার একদিনেই ডলারের দাম ২০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে স্থিতিশীল থাকার পর ব্যাংকগুলোতে ওভারডিউ পেমেন্টের চাপ বাড়তে থাকায় রেমিট্যান্স ডলারের বাজার গরম হয়ে উঠেছে। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে ব্যাংকগুলো ডলারের দাম এখনো ১২২ টাকা দেখাচ্ছে।
এর আগে গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে বাংলাদেশ ব্যাংক মৌখিক নির্দেশনায় রেমিট্যান্স ডলার কেনাবেচার সর্বোচ্চ দর ১২২ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। পাশাপাশি ডলার কেনাবেচার মধ্যে সর্বোচ্চ ব্যবধান এক টাকার বেশি না রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। নিয়ম ভঙ্গকারীদের জরিমানাসহ শাস্তির আওতায় আনার কথাও বলা হয়।
বেসরকারি ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে রেমিট্যান্স ডলারের দর ১২১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১২২ টাকার মধ্যে রাখা হচ্ছিল। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমদানি পেমেন্টের চাপ (ওভারডিউ পেমেন্ট) বাড়তে থাকায় ডলার সংগ্রহের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এতে অনেক ব্যাংকই রেমিট্যান্স ডলারের দাম বাড়িয়ে কিনছেন।
গত সোমবার (২৭ জানুয়ারি) এক সভায় আমদানি ও ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির সব ওভারডিউ পেমেন্ট দ্রুত পরিশোধের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। অথরাইজড ডিলারস ফোরামের সভায় দেওয়া এ নির্দেশনা ডলারের চাহিদা আরও বাড়িয়ে দেয়। এর পরই হঠাৎ রেমিট্যান্স ডলারের চাহিদা বেড়ে যায় এবং দাম বাড়তে শুরু করে।
সদ্যবিদায়ী বছরের ডিসেম্বরে ডলারের দর ১২৮ টাকায় উঠে যায়। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক ১৩টি ব্যাংককে অতিরিক্ত দামে ডলার কেনার বিষয়ে ব্যাখ্যা তলব করে। ডিসেম্বরের শেষ দিকে রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে এক সভায় ‘রেমিট্যান্স ও রপ্তানিতে’ সব ব্যাংককে ডলারের একই দর দেওয়ার নির্দেশ দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
এদিকে, ছোট মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নিয়ম শিথিল করা হয়েছে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এসব প্রতিষ্ঠান ১০ হাজার ডলার সিকিউরিটি ডিপোজিট এবং নন-রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি (এনআরএফসি) অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ব্যালেন্স রাখার বাধ্যবাধকতা ছাড়াই সরাসরি ব্যাংকগুলোর কাছে রেমিট্যান্স ডলার বিক্রি করতে পারবে বলে জানানো হয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ডলারের দাম বৃদ্ধি এবং আমদানি পেমেন্টের চাপ মোকাবিলায় ব্যাংকগুলো কী পদক্ষেপ নেয়, তা এখন সবার নজরে।